সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন ইডেন কলেজের এক ছাত্রী।
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের যে সংঘাত, সেই সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর নিউ মার্কেট পুলিশের ‘হামলার’ ঘটনায় নিউ মার্কেট জোনের এসি, থানার ওসি এবং জড়িতদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সংঘর্ষ চলাকালীন ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী ‘কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য’ এবং ‘অশালীন অঙ্গভঙ্গি’ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. ঢাকা কলেজের সঙ্গে সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সমন্বয়ে ঢাকা কলেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য খুলে দিতে হবে।
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের মধ্যকার এই সংকট নিয়ে আমরা বারবার রাস্তায় নেমেছি। আমরা বারবার বলেছি, আমাদেরকে একটা সমাধান দেন। কিন্তু কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি।
‘এই সংকটের যতদিন না একটি সৃজনশীল সমাধান হয়, ততদিন শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষার্থীর মুখোমুখি অবস্থান চলতে থাকবে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।’
এর আগে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা কলেজের সংঘর্ষ শেষে মধ্যরাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের সাত পয়েন্টে ব্লক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যদিও আজ সেটি তারা পালন করেননি।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের ছাত্র আসিফ মোহাম্মদ সজিব উদ্দীন বলেন, ‘জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা গতকালকের ঘোষিত ব্লকেড কর্মসূচিটি উইথড্র করেছি। এখন আমরা চার ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি।
‘এই চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমদকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচি দিব।’
গতকালের সংঘর্ষে কতজন আহত হয়েছে জানতে চাইলে সজিব উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দৃশ্যমান ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আর নরমালি পঞ্চাশের অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’
সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সজিব উদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল নীলক্ষেতে যখন দুই পক্ষের ধাওয়া এবং পাল্টা ধাওয়া চলছে, তখন আমি পুলিশের এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাকে ফোন দিই যেন তারা দুই পক্ষকে সাউন্ড গ্রেনেন্ড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিন্তু পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রটোকল দিয়ে আমাদের দিকেই শুধু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।
‘এরপর আমাদের বোনেরা যখন ইডেন কলেজ থেকে বের হয়, তখন নীলক্ষেতে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের বোনদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। আমরা জড়িতদের শাস্তি চাই।’
0 coment rios: